শ্যামনগরে দিনমজুর অমেলার বসতভিটা দখলে নিলো লাঠিয়াল বাহিনী!
ইসমাইল হোসেন, শ্যামনগর: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামে দিনমজুর অমেলা মন্ডলের পৈতৃক বসতভিটা ও গাছ কেটে জোরপূর্বক জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর একই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আশুতোষ মন্ডল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মৃত পাচু রাম মন্ডলের পুত্র আশুতোষ মন্ডল সম্প্রতি অমেলা মন্ডল ও তার স্বামী বিষ্ণুপদ মন্ডলের ২৫ বছর আগে লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে, বসতঘর ভেঙে এবং মাটি কেটে ভিটাটি জবরদখল করেন। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এস.এ ২৭৯ খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত মুন্সিগঞ্জ মৌজার এই জমির মালিক ছিলেন মৃত প্রসন্ন মন্ডল। তার দুই পক্ষের স্ত্রী ও সন্তানরা জমির মালিকানা পেয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন হাত বদলের মাধ্যমে জমিটি পাচু রাম মন্ডলের দখলে আসে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, পাচু রামের ছেলে আশুতোষ মন্ডল ১৫-২০ জন লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে পার্শ্ববর্তী দিনমজুর অমেলা মন্ডল ও বিষ্ণুপদ মন্ডলের সাড়ে ৭ শতক ভিটার মধ্যে ২ শতক জমিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টিরও বেশি গাছ কেটে জমিটি জবরদখল করেন। অভিযুক্ত লাঠিয়াল বাহিনীতে মথুরাপুর গ্রামের সুরেন মন্ডলের পুত্র দীনেশ, দেবেন মন্ডলের পুত্র তারক ও আশুতোষের ছেলে ভাস্করের নাম উঠে এসেছে।
ঘটনার পর ১৫ জুলাই অমেলা মন্ডল শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, খতিয়ানভুক্ত ৪৬ বিঘা জমি বর্তমানে “ক” তফসিলভুক্ত ও বিচারাধীন রয়েছে। তারা প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেন, ইউএনও তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক এবং ক্ষতিপূরণসহ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুক।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত আশুতোষ মন্ডল বলেন, “এস.এ ২৭৯ খতিয়ানের আওতায় আমার আড়াই বিঘা জমি রয়েছে, যা আমি ক্রয় করেছি। আমিন দিয়ে মেপে জমির সীমানা নির্ধারণ করে এক ফুট বাদ দিয়ে জমি উদ্ধার করেছি। বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার তিন দিন কাজ করেছি—তাহলে এটাকে জোরপূর্বক জবরদখল বলা যায় না। ওখানে কোনো গাছও ছিল না।”
অন্যদিকে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে জানান, অমেলা মন্ডলের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে শুনানির দায়িত্ব দিয়েছি।