অনলাইনকৃষিজীবনযাপনসদরসাতক্ষীরা জেলাসারাবাংলা

সাতক্ষীরার লাবসায় পানিবন্দী সহস্রাধিক মানুষের পাশে চেয়ারম্যান আ. আলীম

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ ও ২ এর কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে বেতনা পাড়ে নির্মিত স্লুইসগেট সংস্কারে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সদরের লাবসা ইউনিয়ন ও ঝাউডাঙ্গা এবং বল্লী ইউনিয়নের লক্ষ লক্ষ মানুষ। নষ্ট ও ব্যাবহার অনুপযোগী স্লুইস গেটের কারনে বর্ষার পানি ও বেতনা নদীর জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে সব ঘরবাড়ি, পুকুর, মৎস্য ঘেরসহ হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে ধানের বীজপাতা, শাকসবজিসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত স্লুইস গেট ও অনিয়ম দুর্নীতির কারণে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে সরকারের কোটি কোটি টাকা জনগণের উপকারে না এসে ক্ষতির কারণ হয়েছে।

সরেজমিনে বেতনা পাড়ে গিয়ে দেখা যায় পাউবোর অপরিকল্পিত স্লুইস গেটের পাখা ওয়াপদার বেঁড়ির উপরে তোলা রয়েছে। স্লুইস গেট রক্ষণাবেক্ষণের কোন লোক নেই। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড পওর বিভাগ-১ এর লাবসা ইউনিয়নের খেজুরডাঙ্গা ৬ ব্যান্ট স্লুইস গেট ও আর কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ২ ব্যান্ট স্লুইস গেট। পওর বিভাগ-২ এর রাজনগর ধেঁড়েখালি ৩ ব্যান্ট স্লুইস গেট, জামাই পাড়া সংলগ্ন ৩ ব্যান্ট স্লুইস গেট, কয়ার বিল ২ ব্যান্ট স্লুইস গেট, কন্দুরডাঙ্গা এক পাড়ে ১ ব্যান্ট, ওপারে ২ ব্যান্ট স্লুইস গেট ও বেড়ারডাংগী ২ ব্যান্ট স্লুইস গেট সবগুলি অপরিকল্পিতভাবে যেনতেন দায়সারা স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছে। কোনোটির পাখা আছে তাও উল্টা লাগানো আবার কোনটার পাখা নেই। সরকারি কোটি কোটি টাকা অপচয় করা হয়েছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সংস্কারকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে দায়সারা স্লুইস গেট নির্মাণ করেছেন। যা এখন জনগণের গলার কাঁটা।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের ৩৭ বছরের বারবার নির্বাচিত সুযোগ্য চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল আলিম জানান, আমার লাবসা ইউনিয়নসহ বল্লী ও ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন অব্যাহত বর্ষার পানি ও বেতনা নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। ইউনিয়নের মানুষের বসতবাড়ি, পুকুর, মৎস্য ঘেরসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ ও ২ এর কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। সেই সাথে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাহেবকে দিয়েও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলিয়েছি কিন্তু তাদের কোন সাড়া পায়নি। তাদের সাড়া না পেয়ে আমি নিজের উদ্যোগে এলাকার মানুষদের নিয়ে বস্তা দিয়ে জোয়ারের পানি আটকাতে চেষ্টা করছি। যেন নতুন করে কোন গ্রাম প্লাবিত না হয়। আমি ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করেছি। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদ লাবসা ইউনিয়নের তলিয়ে যাওয়া পানিবন্দী এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

এ বিষয়ে লাবসা ইউনিয়নের পানিবন্দি মোঃ মনিরুল ইসলাম, মোঃ জুয়েল হোসেন, মাওলানা কুতুব উদ্দিন ও বল্লী ইউনিয়নের ইসরাইল শেখ বলেন, অপরিকল্পিত স্লুইস গেটে কোনটার পাখা নেই। কোনটার স্লুইস গেটের পাখা ওয়াপদার উপরে রাখা হয়েছে আবার কোনটার পাখা পিছনে না লাগিয়ে সামনে লাগিয়েছে। যে কারণে উল্টো নদীর জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকছে। প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। কোন স্লুইস গেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন বিভাগের আওতায় তা দুই বিভাগের কর্মকর্তারা তা অবগত নেই। পানিবন্দী এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের দাবি প্রতিবছর ছয় মাস জলাবদ্ধতায় অসহায় পানিবন্দী মানুষদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে এবং সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অনিয়ম দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *