অপরাধশ্যামনগরসাতক্ষীরা জেলা

৫ দিনেও সন্ধান মেলেনি শ্যামনগরের অপহৃত অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর

স্টাফ রিপোর্টার: ১৪ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণীর এক হিন্দু ছাত্রীকে অপহরণের পাঁচ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ, অপহরণকারি রাজনৈতিক দলের নেতা হওয়ায় তাকে ধরতে ও তার জিম্মায় থাকা ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার কার্যক্রম ফলপ্রসু হচ্ছে না।

শ্যামনগর উপজেলার সিংহড়তলী গ্রামের এক বৃদ্ধ জানান, তার মেয়ে ২০২০ সালে তৃতীয় সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় অধিক রক্তক্ষরণে মারা যায়। তার দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। জামাতা হরিনগর বাজারে একটি মুদি দোকানে মাসিক বেতনে কাজ করে। বড় নাতনি বণশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। বড় নাতনিকে স্কুলে যাওয়া ও আসার পথে উত্যক্ত করতো মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চুনকুড়ি গ্রামের আব্দুল মোড়লের ছেলে তাইজুল ইসলাম (২০)। তাইজুল মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলে নিজেকে দাবি করতো। গত ২৩ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার নাতনি বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে বের হয়। রাতে সে বাড়ি ফেরেনি। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে তাকে না পাওয়ায় ২৪ জুন তিনি (দাদু) থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে চাইলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেটা গ্রহণ না করে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি অভিযোগ করতে বলেন। বাধ্য হয়ে তিনি (দাদু) অভিযোগ করেন। পরে জানতে পারেন , মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম সরদারের সহযোগিতায় তাইজুল সোমবার স্কুলে পৌঁছানোর আগেই তার নাতনিকে মটর সাইকেলে করে অপহরণ করেছে। নাতনিকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বুধবার রাতে তাইজুল ও নাতনিকে সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড বিহারীনগর গ্রামের কাদের সরদারের ছেলে আলম সরদারের বাড়িতে অবস্থান করতে দেখা গেছে। আলম সরদার ঝাউডাঙা বাজারের একটি রাইস মিলের সরদার। থানায় মামলা না হওয়ায় র‌্যাব নাতনিকে উদ্ধারে সহযোগিতা করতে পারছে না। তাইজুলের বাড়িতে যেয়ে তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। পুলিশ বিভিন্ন সময়ে নাতনিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করছে।

এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি শরিফুল ইসলাম সাগর ওইস্কুল ছাত্রীকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, ভিকটিম উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

শ্য্যামনগর উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সংগঠনের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অভিযোগ পেলে পরবর্তী সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করা হবে বলেও তিনি জানান।

এ ব্যপার শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *