কালিগঞ্জে দুই সন্তানের জননীকে নির্যাতন করে হ/ত্যা/র অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার: দুই সন্তানের এক জননীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার দুড়দুড়ি গ্রাম থেকে পুলিশ তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। মৃতের নাম বৈতরণী মন্ডল (২৫)। তিনি শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের জেলিয়াখালি গ্রামের খগেন্দ্রনাথ মন্ডলের মেয়ে ও কালিগঞ্জ উপজেলার নন্দিকাটি গ্রামের মিঠুন ঘরামীর স্ত্রী।
শ্যামনগর উপজেলার জেলিয়াখালি গ্রামের দ্বিগেন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, তার ভাই খগেন্দ্রনাথ মন্ডলের মেয়ে বৈতরণী মন্ডলের সঙ্গে আট বছর আগে কালিগঞ্জ উপজেলার নন্দিকাটি গ্রামের পরিমল ঘরামীর ছেলে মিঠুন ঘরামীর বিয়ে হয়। মিঠুন মাদকাসক্ত ছিল। জয়া ঘরামী (৬) ও জ্যোতি ঘরামী (৪) নামে তাদের দুটি কণ্যা সন্তান রয়েছে। তিন বছর আগে মিঠুন কাজ করার জন্য ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালর শহরে যায়। সেখানে যেয়েও সে মাদক সেবন করতো। মিঠুনের অনুপস্থিতিতে তার মা মমতা ঘরামী ও বোন পুতুল ঘরামী প্রতিনিয়ত বৈতরণীকে বাপের বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতো। ডেতে রাজী না হওয়ায় তাকে মারপিট করতো মমতা ও পুতুল। একপর্যায়ে ঠিকানা যোগাড় করে গত বছরের শ্রাবন মাসে বৈতরনী ব্যাঙ্গালোরে গেলে তাকে নির্যাতন করে নর্দমায় ফেলে দেয় মিঠুন। স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে বৈতরণী বাড়িতে চলে আসে। এরপর থেকে শ্বাশুড়ি মমতা ও ননদ পুতুল তাকে বেশি নির্যাতন শুরু করে। দু’ সপ্তাহ আগে বৈতরণী বাপের বাড়িতে এসে বিষয়টি তাদেরকে জানায়। তিনি ও তার দাদা খগেন্দ্রনাথ তাকে আর শ্বশুর বাড়ি না যাওয়ার জন্য বলে। তাতে সে রাজী না হয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে যায়। বুধবার সকাল সাতটার দিকে প্রতিবেশি এক নারী তাদেরকে বৈতরণীর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার খবর দেয়। সেখানে যেয়ে বৈতরণীর লাশ উঠানে নামানো অবস্থায় দেখতে পান তারা। তবে বৈতরণীর মৃত্যুর পর শ্বাশুড়ি ও ননদ পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ লাশ নিয়ে থানায় চলে যায়। বৈতরণীর মুখে ও পেটে লাল দাগ দেখতে পান তারা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভাইঝি বৈতরনীকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে তার শ্বাশুড়ি মমতা ঘরামী ও ননদ পুতুল ঘরামী।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ময়না তদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডাঃ রাশেদুজ্জামান জানান, এই মুহুর্তে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে না।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, বৈতরণীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে মৃতের কাকা দ্বিগেন্দ্রনাথ মন্ডল মৃতের শ্বাশুড়ি ও ননদের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।a