সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে হা/ম/লা ও ভাং/চু/র, দুই ডাক্তার আহত
স্টাফ রিপোর্টার: চিকিৎসা সেবায় গাফিলতির অজুহাত তুলে রোগীর স্বজনরা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত দু’জন ডাক্তার আহত হয়েছেন। আহত ডাক্তাররা হলেন, জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডা. এম আর আকতার মারুফ ও ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে সার্ভে করতে আসা ডা: তানভীর হোসেন।
শনিবার (৩ মে) সকাল ১০টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জরুরী বিভাগের চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
ঘটনার আকস্মিকতায় সদর হাসপাতালের পক্ষ থেকে জেলা পুলিশ সুপারকে জানানো হয়। সাথে সাথে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুপুরের দিকে আসেন সেনাবাহিনীর একটি টিম।
প্রত্যক্ষদর্শী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মাধ্যমে জানা যায়, শনিবার (৩ মে) সকাল ৯ টার দিকে সদর উপজেলার মাগুরা এলাকার শাহিন নামের এক রোগী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে ইনডোরে ভর্তি হন। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে না পেয়ে রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে তারা ফের জরুরি বিভাগে ফিরে এসে কর্তব্যরত স্টাফদের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়ান। একপর্যায়ে তর্ক থেকে মারামারী ও ভাংচুর শুরু হয়। তবে কে বা কারা এঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন তা জানাতে পারেনি কেউ। তবে অনেকে বলছেন ঘটনার পরপরই সোহেল আহমেদ মানিক সেখানে উপস্থিত হন। এসময় সোহেল আহমেদ মানিক নামীয় ব্যক্তি হামলার শিকার ডা: তানভীর হোসেনকে রক্ষা করেন হামলাকারীদের হাত থেকে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফয়সাল আহমেদ বলেন, হামলাকারীরা রোগীর স্বজন। তারা সংখ্যায় ৭/৮ জন হবে। তবে হামলার সময় ঘটনা স্থলে থাকা নার্স বা ডাক্তাররা কাউকে চিনেন না।
আরএমও ডা. ফয়সাল আহমেদ সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত লে: রাদীদকে বলেন, আমরা কাউকে চিনিনা। সবাই রোগীর স্বজন। অনেক অনলাইন পোর্টাল অনেকের নাম বলছে কিন্তু আমরা কাউকে চিনিনা। আমাদের কাছে কিছু সিসিটিভি ফুটেজ আছে। সেগুলো আমরা পুলিশকে দিয়েছি। সাংবাদিকদেরও দিয়েছি। এ ঘটনায় মামলার জন্য সদর থানায় হাসপাতাল থেকে লোক পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহেল আহমেদ মানিক অনলাইন লাইভে এসে ঘটনার সাথে তিনি জড়িত নয় বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, আমি রোগীর সাথে বেডে ছিলাম। জরুরী বিভাগে কারা ভাংচুর করেছে আমি জানিনা। ভাঙচুরের সময় আমি সেখানে ছিলাম না।
এদিকে, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একাধিক রোগীর স্বজনরা এ প্রতিনিধিকে জানান, হামলা অনাকাঙ্খিত হলেও আরো বেশী মারপিট করার দরকার ছিল হাসপাতালের ওইসব বদমাশদের। তাদের অবহেলায় অনেক রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। স্টাফ গুলো সদর হাসপাতালকে নিজেদের বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করে। টাকা না দিলে অনেক সময় তারা রোগীর গায়ে হাত দেয়না। তাছাড়া, সদর হাসপাতালে কোন রোগী এলেই বাইরের ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেয়। বিশেষ করে ফয়সাল ডাক্তারের ক্লিনিকে কৌশলে রোগী পাঠিয়ে দিয়ে তারা গোপনে পারসেন্টেজ খায়। তাদের প্রত্যেকের শাস্তি দাবী করেন রোগীর স্বজনরা।