অপরাধখুলনাতালাপাইকগাছাসাতক্ষীরা জেলা

তালা-পাইকগাছা সীমান্তে বেপরোয়া মাদক সিন্ডিকেট!

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরার তালা ও খুলনার পাইকগাছা সীমান্তের কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী কানাইদিয়া ও কপিলমুনি অঞ্চল জুড়ে গড়ে উঠেছে মাদকের একাধিক সিন্ডিকেট। দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে মাদক চোরাচালান। প্রায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে গাঁজা, ইয়াবা, দেশী-বিদেশী মদ সহ সকল প্রকার মাদকদ্রব্য। আর এই ব্যবসায় বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে কপোতাক্ষ নদ। এই নদের দুই পাশে ভিন্ন উপজেলা হওয়ায় পাইকগাছা থানার পুলিশ সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কাপিলমুনি থেকে তাড়া করলে কানাইদিয়া আসে আর তালা থানা পুলিশ তাড়া করলে কপিলমুনি চলে যায়। গ্রেফতার এড়াতে তাদের এ খেলা এলাকার মানুষের চিরচেনা।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কানাইদিয়া গ্রামের কপোতাক্ষ নদের বাবলা বাগানের মধ্যে মাদক রাখার জন্য ছোট ছোট গর্ত খুড়ে রাখা হয়েছে। সাতক্ষীরা সীমান্ত সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চোরাই পথে আসা মাদক এই সকল জায়গায় সংরক্ষণ করা হয়। এলাকার ধনী মানুষ থেকে শুরু করে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ এই চোরাকারবারীর সাথে জড়িত।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কপিলমুনি বাজারের বিশিষ্ট স্বর্ণ ব্যবসায়ী কোমল দত্তের ছেলে জয় দত্ত, পল্টু হালদারের ছেলে কামরুল হালদার ও শেখ ফরহাদের ছেলে শেখ ফাইম কানাইদিয়া-কপিলমুনি খেয়াঘাট, কানাইদিয়া-ঘোষনগর খেয়াঘাট সহ একাধিক স্পট দিয়ে চোরা কারবারীদের মাধ্যমে মাদক জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরবরাহ করে। তাদের এই কাজে সহযোগীতা করে কানাইদিয়া খেয়াঘাট স্টান্ডের ভাড়ায় চালিত কয়েক জন মটরসাইকেল চালক। এসকল ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেল চালকরা সারাদিন খেয়াঘাটে বসে থাকে। ডাক পড়ার সাথে সাথেই মাদক নিয়ে চলে যায় বিভিন্ন অঞ্চলে। এই চক্রের সাথে এলাকার নারী পুরুষ মিলে ৩৫ জন সদস্য সরাসরি জড়িত। এছাড়াও এলাকায় আরও কিছু ক্ষদ্র ব্যবসায়ী খুচরা বিক্রি করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, গতকাল রাত ৯ টার দিকে শেখ ফাইমের মাদকের চালান আসে। এই মদক নিয়ে হাসিবুল ওই সময়ই পাইকগাছার দিকে চলে যায়। আমরা গ্রামবাসি তাড়া করেও ধরতে পারিনি। আজ ভোরে দেখি সে মদ খেয়ে মাতলামি করছে। কানাইদিয়া গ্রামের রবীন মন্ডল ওরফে সোনা প্রতিদিন বাড়িতে চোলাই মদ তৈরী করে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে মদ কেনার জন্য ভীড় জমায়। এলাকার উঠতি বয়সের ছেলেরা খেলা লেখাপড়া বাদ দিয়ে মাদকে আশক্ত হয়ে পড়েছে বলে জানান তারা।

অভিযুক্ত জয় দত্ত বলেন, আমি কোনো ভাবে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নই। এলাকার মানুষ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর কারণে পরিবারেও বেশ চাপে থাকি। তবে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতার কথা স্বীকার করেন তিনি। কামরুল হালদারের বক্তব্য নেয়ার জন্য ০১৭৮০২৩৩৩৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি। অভিযুক্ত ফাইমের সাথে যোগাযোগ কোনো মাধ্যমে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তালা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, মাদক কেনাবেচার সাথে যারা জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ইতিমধ্যে অনেক মাদক ব্যবসায়ী কে আটক করা হয়েছে। অন্যদেরও আটকের জন্য অভিযান অব্যহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *