সদর

সাতক্ষীরায় আগুনে ভষ্মীভূত ব্যবসায়ীর স্বপ্ন, ক্ষতি ৪০ লাখ

স্টাফ রিপোর্টার: রাতের আঁধারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগায় এক ব্যবসায়ীর স্বপ্ন ভেঙে গেছে। পুড়ে ভষ্মীভূত হয়েছে তার ৪০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল। রবিবার দিবাগত গভীর রাতে সাতক্ষীরা সদরের ব্যাংদহা বাজারের “ভাই বোন ভ্যারাইটি স্টোর্সে” এ ঘটনা ঘটে।

তবে বাজারে তিনজন নৈশপ্রহরী থাকার পরও দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের বিপুল পরিমান মালামাল আগুণে পুড়ে ভষ্মীভূুত হলেও নৈশপ্রহরীরা ভোর বেলায় জানতে পারার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।

আশাশুনি উপজেলার কামালকাটি গ্রামের ও সাতক্ষীরা সদরের ব্যাংদহা বাজারের “ভাই বোন ভ্যারাইটি স্টোর্সে”র স্বত্বাধিকারী অশ্বিনী কুমার দাস জানান, ২০২১ সাল থেকে ব্যাংদহা বাজারের আইয়ুব আলীর কাছ থেকে মাসিক তিন হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে মুদিখানা ও কসমেটিকস এর খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। রবিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। সোমবার ভোর ৫টা ১ মিনিটে বাজারের নৈশ প্রহরী তার দোকানে আগুন লেগেছে মর্মে তাকে অবহিত করেন। সোয়া ৫টার দিকে তিনি মটর সাইকেলে দোকানে আসেন।

স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তার দোকানের দুই লাখ ২০ হাজার টাকার সিগারেট, ৪০০ গেজ কোমল পানীয়, ৪২ হাজার টাকার সোয়াবিন ও সরিষার তেল, এক লাখ ৫৬ হাজার টাকার তিনটি ফ্রিজ, নগদ টাকাসহ ৪০ লাখ টাকার কসমেটিকস ও মুদি খানার মালামাল পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। সকালে সাতক্ষীরা সদর ও আশাশুনি থেকে ফায়ার সিভিল ডিফেন্স এর দুটি টিম ঘটনাস্থলে আসে।

আগুন লাগার বিষয়টি অন্তর্ঘাতমূলক দাবি করে তিনি বলেন, তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কোন মশার কয়েল জ্বালান না। মিটারে বিদ্যুৎ সরবরাহ সঠিকভাবে রয়েছে। তাই কোন দুর্ঘটনার সূযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললে জীবনে বেঁচে থাকাটাই দুষ্কর হবে। ঘটনার যথাযথ তদন্ত চান তিনি। তবে কয়েকবার থানাকে অবহিত করা হলেও পুলিশ সোমবার দুপুর একটার দিকে ঘটনাস্থলে আসায় তিনি অবাক হয়েছেন।

ব্যাংদহা বাজারের নৈশ প্রহরী আলতাফ হোসেন জানান, তিনি বাজারের পূর্ব পার্শ্বে দায়িত্ব পালন করেছিলেন রবিবার রাতে। সেহেরীর আগেই তিনিসহ আনারুল ও নুরু বাড়িতে চলে যান। ভোরে নৈশ প্রহরী আনারুল তাকে ফোন করে অশ্বিনী কুমার দাস এর দোকানে আগুন লাগার বিষয়টি জানালে তিনি মালিককে জানান। তবে রাতে কখন আগুন লেগেছে তা তিনি জানেন না। কয়েক ঘণ্টা ধরে আগুনে মালামাল পুড়ে গেলো আর তারা কিছুই জানেন না এমন প্রশ্নের জবাবে আলতাফ কোন উত্তর দিতে পারেননি।

ব্যাংদহা বাজার কমিটির সভাপতি জমায়েত সানা জানান, বাজারের মসজিদে নামাজ পড়তে আসা এক মুসল্লি তাকে আগুন লাগার বিষয়টি জানান। মসজিদের মাইক থেকে আগুণ লাগার বিষয়টি প্রচার করায় স্থানীয় শতাধিক লোক এসে বাতি ও কলসিতে করে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে ফায়ার সিভিল ডিফেন্স এসে আগুন নেভানোর শেষ কাজ করে। তবে এটা দুর্ঘটনা না অন্তর্ঘাত তা তদন্ত হওয়া উচিত। তবে সোমবার সকাল ১১টায় বাজারের চাতালে জরুরী সভা ডেকে অশ্বিনী কুমার দাসকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরা ফায়ার সিভিল ডিফেন্স এর পরিদর্শক নুরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত ছাড়া আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক জানান, ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *