অজ্ঞান পার্টির কবলে কালিগঞ্জের আ’লীগ নেতা, তিনজনকে কুপিয়ে জখম
স্টাফ রিপোর্টার: মা ও ছেলে চেতনানাশক মিশ্রিত খাবার খেয়ে অচেতন হলেও পরিবার প্রধান আওয়ামী লীগ নেতা অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের চিনতে পারায় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
রবিবার ভোরে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জয়পত্রকাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় তিনজনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কুপিয়ে জখম ও অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া তিনজন হলেন, কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জয়পত্রকাটি গ্রামের মৃত শহর আলী সরদারের ছেলে নুরুল হক (৬৩), তার স্ত্রী রওশানারা খাতুন (৫৪) ও তাদের ছেলে বিষ্ণুপুর প্রাণকৃষ্ণ স্মারক বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী রাহিনুর হক(১৬)।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রওশানারা খাতুন জানান, রবিবার ভোরে সেহরী খেয়ে নামাজ পড়ার পর তিনি ও তার ছেলে রাহিনুর এক ঘরে শুয়ে পড়েন। তার স্বামী নুরুল হক শুয়ে পড়েননি। তবে শুয়ে পড়ার পর তারা আর কিছু বলতে পারেন না।
জয়পত্রকাটি গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে রিতু খাতুন জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি তার বাচ্চাকে নিয়ে দুধ নেওয়ার জন্য চাচা নুরুল হক এর বাড়িতে যান। সেখানে যেয়ে চৌমুহুনীর পাগল শিলুকে দেখতে পান। শিলু ঈদের জন্য জাকাত আনতে নুরুল হকের কাছে যান। পরবর্তীতে তারা বাড়ির কাউবে বাইরে না দেখে ঘরের মধ্যে যান। এ সময় নুরুল হককে একটি ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। রান্না ঘরের এক কোনে অনেক রক্ত পড়ে থাকতে দেখেন।
এ ছাড়া রওশানারা ও রাহিনুরকে দূরে পৃখক স্থানে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। সামান্য চেতনা থাকা নূরুল হক তাকে বলেন যে, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তার ঘরের সিন্ধুক ভাঙার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। একজনকে তিনি চিনতেও পারেন। এ সময় তাকে পিছন দিক থেকে মাথায় কোপ মারলে তিনি পড়ে যান। জীবন বাঁচাতে রান্না ঘরে যেয়ে পড়ে যান তিনি। পরে তারা বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে চলে যায়।
নুরুল হকের চাচাত ভাই আব্দুস সামাদ জানান, নুরুল হকের বাড়িতে সিন্দুক ভেঙে বিভিন্ন প্রয়োজনী কাগজপত্র পুকুর পাড়ে এনে ফেলে রাখা হয়। এ ছাড়া একটি লিচু গাছের তলায় পলিথিন বিছিয়ে কোন ব্যক্তি বা কতিপয় ব্যক্তি সেখানে অপেক্ষা করেছে বলে মনে হয়েছে। সেখানে একটি ব্যাগ পড়ে ছিল। বাড়ি থেকে কি কি জিনিস লুটপাট করা হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। নুরুল হকসহ তিনজনকে দুপুর দুটোর দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় (অধিক রক্তক্ষরণের ফলে) নুরুল হককে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।