আশাশুনিসাতক্ষীরা জেলাসারাবাংলা

আশাশুনির বেড়িবাঁধে ভাঙন, বাজারসহ ১০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার: আশাশুনি উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত মরিচ্চাপ নদীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গোয়ালডাঙা নামক স্থানে ৬০০ ফুট বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে এ ভাঙন শুরু হওয়ায় তা ক্রমশঃ বেড়েই চলেছে। আজ রবিবার দ্রুত বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ না নিলে রাতের জোয়ারে ওই বেড়িবাঁধ ভেঙে গোয়ালডাঙা বাজারের তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেড়িবাঁধের পার্শ্ববর্তী ৫০টি পরিবারসহ বড়দল ও খাজরা ইউনিয়নের কমপক্ষে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়িরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে।

গোয়ালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা আহছান আলী ও আব্দুল মজিদ মোড়ল জানান, বেতনা নদী ও মরিচ্চাপ নদী খননের সুবিধার্থে বুধহাটা ও গোয়ালডাঙাসহ কয়েকটি স্থানে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে রাখা হয়। গতবছরের আগষ্ট মাসে অতিবৃষ্টিতে বেতনা নদীর বিনেরপোতা নামকস্থানে ভেঙে যাওয়ায় সাতক্ষীরা সদরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা যায়। একপর্যায়ে জলাবদ্ধতা দূর করতে বুধহাটা ও গোয়ালডাঙাসহ কয়েকটি স্থানের আড়াআড়ি বাঁধ কেটে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। জেয়ারের পানির স্রোতে মজিদ মোড়লের বাড়ির সামনে মরিচ্চাপ নদীতে সেপ্টেম্বও মাসের প্রথম দিকে ভাঙন দেখা দেয়। ওই বাঁধ সংস্কার না করা হয়নি। ওই সময়ের পর থেকে নদীপাড়ের ৫০ ঘর বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়িরা হুমকির মধ্যে ছিলেন।

গোয়ালডাঙা বাজারের ব্যবসায়ি সেলুন মালিক সুকুমার রাহা, মুদি ব্যবসায়ী সুজিত কুলু ও মাংস বিক্রেতা কেরামত আলী জানান, শনিবার সন্ধ্যায় মজিদ মোড়লের বাড়ির পাশ থেকে নতুন করে বেড়িবাঁধে ফাঁটল দেখা দেয়। রাতের মধ্যে ফাটল গ্রামীন ব্যাংকের ভবন ও কুদ্দুসের অটো রাইস মিল ছাড়িয়ে যায়। বেড়িবাঁধ ভেঙে কমপক্ষে ৬০০ ফুট ছাড়িয়ে যায়। দুপুরের জোয়ারের তোড়ে বেড়িবাঁধের অনেকাংশ নদীগর্ভে পড়ে যায়। ফলে বেড়িবাঁধ কোথাও কোথাও দেড় দেড় থেকে দুই ফুট সরু হয়ে যায়। রাতের জোয়ারের আগে বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে ভাঙন বেড়ে ও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গোয়ালডাঙা বাজারের তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেড়িবাঁধের পার্শ্ববর্তী ৫০টির বেশি পরিবার ছাড়া খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের বড়দল, গোয়ালডাঙা, বুড়িয়া, ফকরাবাদ, জামালনগর, বামনডাঙাসহ কমপক্ষে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে গোয়ালডাঙা ও তেঁতুলিয়া মধ্যে খেয়া পারাপার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। পানিতে ভেসে যাবে কয়েক হাজার বিঘার চিংড়ি ঘের, বোরো ধানের খেত ও সবজির খেত। পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ি ও গ্রামবাসি রাত জেগে বেড়িবাঁধ পাহারা দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান, যেখানে ভাঙন দেখা দিয়েছে সেটা মূল বেড়িবাঁধের মধ্যে পড়ে না। তাই সেটা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড -২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *