ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে খাল! সাতক্ষীরার মজুমদার খাল খননের কাজ বন্ধ
স্টাফ রিপোর্টার: জমি অধিগ্রহ না করে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি কেটে খাল খনন করার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ পূর্বক ক্ষতিপুরণের টাকা না পাওয়া পর্যন্ত খাল খননসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কয়েকজন জমির মালিক। এদিকে জমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে খাল খনন কার্যক্রম শুরু করায় ক্ষোভে ওই খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকাবসী ও জমির মালিকরা। তবে কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় ঠিকাদারের প্রতিনিধি জমির মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করাসহ নানাভাবে হয়রানী করার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ জমির মালিকদের।
সরেজমিনে সাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহা ইউনিয়নের ভবানীপুর ব্রীজ এলাকায় গেলে স্থানীয় বাসিন্দা ও জমির মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, ভবানিপুর মৌজার জে. এল নং-৫ এর আওতায় মজুমদার খালসহ দুই পাড়ে আমাদের ব্যক্তিগত রেকর্ডীয় মালিকানাধীন জমি আছে। আমরা সম্প্রতি জানতে পারলাম মজুমদার খালের খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড, সাতক্ষীর -১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর হতে দরপত্র আহবান করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে এবং গত ১৪ ফেব্রুয়ারী খাল খননের কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য উদ্বোধন করে কাজ শুরু করেছে। তবে দুঃখের বিষয় আমরা নিজস্ব জমির মালিক হলেও আমাদের কোন নোটিশ প্রদান করা হয়নি বা আমাদের জানানো হয়নি। সরকারি নিয়মনীতি না মেনে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগ সাজসে ঠিকাদার ক্ষমতার অপব্যবহার করে খাল খননের কাজ শুরু করেছে।
তিনি আরো বলেন, খালের দুই পাড়দিয়ে ধান, মাছের ঘের, গাছ পালা, পুকুর, এমনকি ঘরবাড়ি রয়েছে। ঠিকাদার আমাদের ক্ষতি করে আমাদের জমির মালিকদের রাস্তায় বসানোর পাইতারা করা হচ্ছে। এমতবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে জমির সীমানা নির্ধারণ করে জমি অধীগ্রহণের মাধ্যমে জমির মালিকগনকে সরকারি নিয়ম নীতি অনুসরণ করে ক্ষতিপুরণের টাকা না দেওয়া পর্যন্ত খাল খনন কাজ কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
থানাঘাটা এলাকার বাসিন্দা কাজী আবু তাহের বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত মজুমদার খাল ও খালের দুই ধারের জমির খাজনা পরিশোধ করিতেছি। কিন্তু আমাদেরকে না জানিয়ে ঠিকাদার খাল খননের কাজ শুরু করেছেন। আমরা জমির মালিকগণ ঠিকাদারের প্রতিনিধির কাছে কার অনুমতি নিয়ে খাল খননের কাজ শুরু করেছেন জানতে চাইলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী-১ এর নির্দেশে আমরা খাল খননের কাজ শুরু করেছি।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি মাজহারুল ইসলাম বলেন, খালের অনেক জায়গায় ব্যক্তিগত জমি থাকায় জমির মালিকগণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এভাবে কাজ বন্ধ থাকলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবো।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দীন বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড কারো ব্যক্তিগত জমি কেটে খাল তৈরী করবেনা। ম্যাপ অনুযায়ী খাল খনন করা হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, WSAT-1-27 নং প্যাকেজের আওতায় ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৯ টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরার মজুমদার খালের ১৬.৯৮০ কি.মি খননের জন্য টেন্ডার(টেন্ডার আইডি ৯৭৯০৩২) আহবান করা হলে কাজ পান ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স। যার ওয়ার্ক ওয়ার্ডার 1W-1/142। বর্তমানে ঠিকাদর শফি খন এর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন মাজহারুল ইসলাম নামের এক যুবক।