দিগন্ত পরিবহন সাতক্ষীরায় গাছের সঙ্গে ধাক্কা: হেলপারসহ ১৩ যাত্রী আহত
গাজী হাবিব: ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় আসা দিগন্ত পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় দিগন্ত পরিবহনের ১২জন যাত্রী ও এক হেলপার আহত হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারী) ভোর ৪ টায় সাতক্ষীরা শহরের সার্কিট হাউজের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণে সকাল থেকে সাতক্ষীরা- যশোর সড়কে ঘণ্টাব্যাপি যানজটের সৃষ্টি হয়।
আহতরা হলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মাজাট গ্রামের দাউদ আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন, একই উপজেলার জয়নগর গ্রামের বাহার আলী তরফদারের ছেলে আব্দুর রউফ, দেবহাটা উপজেলার রামনাথপুর গ্রামের মৃত. তারক চন্দ্র ঘোষের ছেলে তপন ঘোষ, কালিগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুর গ্রামের বাহার আলীর ছেলে রুহুল আমিন, একই উপজেলার নীলকণ্ঠপুর গ্রামের আশরাফ আলী গাজীর ছেলে শাহীনুর রহমান। এছাড়া চায়না (২৮) ও আব্দুল্লাহ (৪) নামে দুইজনের ঠিকানা জানা যায়নি। প্রথমােক্ত পাঁচজনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও শেষের দুইজনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া ছয়জনকে বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তপন কুমার ঘোষ জানান, তিনি বুধবার সকালে ভারতীয় মেডিকেল ভিসার জন্য জন্য ঢাকার যমুনা পার্কে যান। সেখান থেকে কাজ মিটিয়ে রাতে ঢাকা থেকে নাভারণগামী একটি পরিবহনে যশোরের চাঁচড়ায় নামেন। সেখান থেকে সাতক্ষীরাগামী দিগন্ত পরিবহনে ওঠেন। ঘুম লাগার কারণে নাভারণ ছাড়ার পর চালক বার বার ব্রেক কষছিলেন। পরিবহনটি বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের সার্কিট হাউজের সামনে পৌঁছালে ঘুমের কারণে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরিবহনটিকে ব্রাক অফিসের পাশে বড় মেহগনি গাছের সাথে সজোরে ধাক্কা মারেন। এতে ওই গাছটি পরিবহনের সামনে ঢুকে যায়। পরিবহনটি দুমড়ে মুচড়ে গেলে তিনি ও হেলপারসহ কমপক্ষে ১৩ যাত্রী আহত হন। পরিবহনে ৪০ থেকে ৪৫ জন যাত্রী ছিলো বলে জানান তিনি।
স্থানীয় একটি পত্রিকার প্রেস অপারেটর শহরের আবু সুরাজ পিন্টু জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি কেন্দ্রীয় বাসস্টাণ্ড সংলগ্ন একটি পত্রিকা অফিসে ছাপার কাজ শেষে বড় ধরনের একটি শব্দ শুনে স্থানীয় নাইটগার্ড পলাশকে সাথে নিয়ে সার্কিট হাউজ মোড়ে গিয়ে তপন ঘোষ, চায়না, শিশু আব্দুল্লাহ ও আলমগীরকে পরিবহনের ভেতর থেকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এসে বাকীদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এসময় পুরো কম আহতরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হন।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আশরাফুল হক জানান, আশঙ্কাজনক হওয়ায় চায়না ও শিশু আব্দুল্লাহকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে গাছ কেটে যাত্রীদের বের করার সময় সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনের কনস্টেবল নায়েব আলী আহত হন। তিনিও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে দুর্ঘটনায় কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।