কালিগঞ্জে অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা
মাসুদ পারভেজ, কালিগঞ্জ: কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের গা ঘেঁষে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিসের কোন ছাড়পত্র ছাড়া গ্রামের লোকালয়ের ভিতরে কাগজপত্র বিহীন গড়ে ওঠা অবৈধ ব্রাদার্স ব্রিকস ওরফে সায়েম ব্রিকসে টায়ার জ্বালিয়ে তেল ও কাঠ পুড়িয়ে ভাটা পরিচালনা করায় অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এ সময় কোন প্রকার অনুমোদন না থাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের সাতক্ষীরা জেলার বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয় বিশ্বাস ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঐ সময় ভাটা পরিচালনার জন্য কোন বৈধ কাগজপত্র এবং মালিক পক্ষের লোকজন না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয় সরদার মোহাম্মদ আলী এবং আল মামুন নামে ২ ভাটা শ্রমিককে আটক করে নিয়ে যায়। জরিমানার ৫ লক্ষ টাকা অনাদয়ের ঘটনায় এ ২ জনকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড করা হয়েছে বলে ভ্রমন আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫ টার সময় বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাতক্ষীরার সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয় বিশ্বাস এ আদালত পরিচালনা করেন।
আটককৃত শ্রমিকরা হলেন পাবনা জেলার, কামালপুর গ্রামের, ঈশ্বরীপুর থানার মৃত আলমের পুত্র ভাটার চুল্লি শ্রমিক মোহাম্মদ আলী এবং সাতক্ষীরার, শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী গ্রামের আবুল হোসেন সরদারের পুত্র ভাটা শ্রমিক আল মামুন। অবৈধভাবে লোকালয় গ্রামের ভিতরে শীতলপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ এবং তার সোহদর সেলিম ওরফে বাবলু ব্রাদারস ব্রিকস নামে এই অবৈধ ভাটাটি দীর্ঘ দু, যুগের বেশি সময় ধরে চালিয়ে আসছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে ভাটাটি বন্ধ সিলগালা এবং ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে যায়। সু- চতুর ভাটা মালিক বিষয়টিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নামে মহামান্য হাইকোর্টে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিটের কারণে অভিযান পরিচালনায় জেলা প্রশাসন আটকে যায়। এই সুযোগে একেবারে গ্রামের ভিতরে ভাটা পরিচালনার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষণ ছাড়াও গ্রামের মধ্যে কোটি কোটি টাকায় নির্মিত রাস্তাগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এ ছাড়াওয় টায়ারের গুড়া ও কাঠ পোড়ানোর কালো ধোয়ায় এলাকার শিশু থেকে শুরু করে সব শ্রেণী পেশার মানুষের শ্বাসকষ্ট সহ শ্বাসকষ্ট জনিত নানান রোগ বালাই লেগেই থাকে। হাইকোর্টের রিটের কারণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দীর্ঘদিন এই অবৈধ ভাটাটি পরিচালিত হয়ে আসলে ও কিছু করার নেই। ভাটা পরিচালনা করতে যেয়ে ব্রাদার্স ব্রিকসের মালিক আব্দুল ওদুদ এবং তার ভাই আব্দুস সেলিম ওরফে বাবলু ব্যাংক, কয়লা , শ্রমিকদের পাওনা টাকা দিতে না পারায় ভাটাটি বন্ধের উপক্রম হয়। ঐ সময় জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের নিকট থেকে কম দামে ইট দেওয়ার নামে ভাটার মৌসুম শুরুর আগে অগ্রিম শতশত মানুষের নিকট থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। সময় মতন ঐ সমস্ত ভুক্তভোগীদের ইট না দেওয়ায় পাওনা টাকা আদায়ের জন্য শত শত ভুক্তভোগী আদালত সহ থানা এবং উপজেলা জেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়।এতে অবস্থা বেগতিক দেখে সনকা গ্রামের প্রবাসী আব্দুস সবুরের নিকট থেকে বছরে ২৫ লক্ষ টাকা করে অগ্রিম ৫০ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে হারি/লিজ দেয়া। সেই থেকে প্রবাসে আব্দুর সবুর ভাটাটি অবৈধভাবে পরিচালনা করে আসছে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে এই সমস্ত ভুক্তভোগীরা ইট না পেয়ে উপজেলা প্রশাসন সহ থানায় লিখিত অভিযোগ জানায়। পরে প্রবাসী আব্দুল সবুর তার পুত্রের নামে সায়েম ব্রিকস নামে বর্তমান তার স্ত্রী রুনা খাতুনকে দিয়ে পরিচালনা করে আসলেও নেই কোন বৈধ কাগজপত্র। দীর্ঘদিন জেলা উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে লাল কার্ড দেখিয়ে অবৈধভাবে বছরের পর বছর ভাটা পরিচালনা করে আসছে।