জীবনযাপনসদর

জমি বিরোধে সাতক্ষীরায় মসজিদের ইমামকে গাছে বেধে মারপিটের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরধরে সদর উপজেলার বিহারী নগর গ্রামের পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদের ইমাম মোঃ রুহুল আমিনকে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেধে ব্যাপক মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিহারী নগর গ্রামের মৃত মোবারক সরদারের ছেলে ঈমাম মোঃ রুহুল আমিন এই অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সদর উপজেলার বিহারী নগর গ্রামের পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদের ইমামতি করার পাশাপাশি তিনি কৃষি খামার দেখাশুনা করেন। বিহারী নগর মৌজায় পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ১৭ শতক জমিতে তিনি ধান চাষ করতেন। কিন্তু ২০২২ সালের মে মাসে একই গ্রামের মৃত মোফাজ্জেল সরদারের তিন ছেলে মকফুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ও আতাউর রহমান জোর পূর্বক তাদের ওই ১৭ শতক জমি দখল করে নিয়ে সেখানে মাছ চাষ শুরু করেন। মাকফুর সর্ম্পকে তার চাচাতো ভাই হয়।

এঘটনায় তিনি সদর থানায় একটি অভিযোগ দিলেও তারা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে তারা প্রতিনিয়ত আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে অনেক বার স্থানীয় শালিশের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তারা কোন কিছুই তোয়াক্কা না করে জমি জবরদখল করে রেখেছিল। আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় মকফুর গংদের বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ কোন কথা বলতে সাহস পেত না। কিন্তু গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর মকফুর গংরা আমার জমি ছেড়ে দেয়।

ইমাম মোঃ রুহুল আমিন আরো বলেন, জমি ছেড়ে দিলেও মকফুররা আমার উপর রাগান্বিত ছিল। এমতাবস্থায় জমির হারির টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চাচাতো ভাই মকফুর বিহারীনগর গ্রামের পশ্চিম পাড়া মক্তবের কাছে আমাকে ডেকে পাঠায়। সেখানে পৌছানো মাত্রই মকফুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ও আতাউর রহমান তিন ভাই মিলে আমাকে মক্তবের পাশে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেধে বেদম মারপিট করে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা এসে আমাকে উদ্ধার করে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক মসজিদ কমিটিকে জানানো হলেও তাদের তিন ভাইয়ের ভয়ে কেউ কোন পদক্ষেপ নিতে সাহস পাচ্ছে না। পরে আমার ছোট ভাই আল আমিন বাদী হয়ে রাত ৮টায় সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মকফুর রহমান ইতোপূর্বে পার্শ্ববর্তী গ্রামে ডাকাতি করতে যেয়ে হাতেনাতে ধরাপড়ে কয়েক বছর হাজত বাস করেছে। দীর্ঘদিন হাজত বাস করার পরও তার মানসিক অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। প্রতিনিয়ত আমার ও ছোট ভাইয়ের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তার পৈশাচিক আচারণের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে চলছে। একই সাথে গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে।

একজন ইমামকে গাছে বেধে বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি তিনি যাতে মকফুর, মোস্তাফিজুর ও আতাউর রহমানের রোষানল থেকে রেহায় পেতে পারেন তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সামিনুল ইসলাম একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *