আশাশুনির অনিমেষ হত্যার ঘটনায় পুলিশ সুপারের ঘটনাস্থল পরিদর্শন
স্টাফ রিপোর্টার: জমির সীমানা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে অনিমেষ সরকার নামের এক সাইকেল মিস্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। রবিবার সকাল ১০টায় তিনি আশাশুনির লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামে যেয়ে কথা বলেন ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের সাথে।
এদিকে অনিমেষ সরকারকে হত্যার ঘটনায় শনিবার পুলিশ আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়নের লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের ওমর আলী মল্লিকের ছেলে ই্উনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক মালেক মল্লিক, একই গ্রামের আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে বাবুল আক্তার মোল্লা ও নাকতাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক সরদারের ছেলে জিল্লুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলেও রবিবার তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে না পাঠানোয় নিহতের পরিবারসহ স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিহত অনিমেষের লাশ নাকতাড়া শ্মশানে সৎকার করা হয়েছে।
নিহত অনিমেষ সরকার আশাশুনির লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের নিরঞ্জন সরকারের ছেলে।
নিহতের মা শেফালী রানী সরকার জানান, তার ছেলেকে হত্যার পর তিনি থানায় মালেক মল্লিক ও তার ভাই অহিদ মল্লিকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজকে আসামী করে থানায় এজাহার দেন। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কথামত তা পরবর্তীতে পরিবর্তণ করে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দিতে হয়। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা শনিবার মালেক, বাবলু ও জিল্লুর রহমানকে আটক করে নিয়ে যায় মর্মে তিনি শুনেছেন। রবিবার সকালে পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম তাদের বাড়িতে এসে ন্যয় বিচার পাওয়ার নিশ্চিয়তা দিলেও কোন আসামীকে গ্রেপ্তার না দেখানোয় হতাশ হয়েছেন তিনি।
এদিকে নিহত অনিমেষের স্বজনরা জানিয়েছেন, গত ৫ আগষ্টের পর থেকে স্থানীয় এক বিএনপি’র নেতা গাজীপুর গ্রামের রফিকুজ্জামান ছোট্টু ও তার কয়েকজন সহযোগী হিন্দুদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করতে থাকেন। প্রতিবাদ করা হয় বিষয়টি নিয়ে। এখন সেই ছোট্টু পাড়ায় এসে প্রচার দিচ্ছে যে, এজাহারে কারো নাম নেই। তাই খুব তাড়াতাড়ি আটককৃতরা মুক্তি পেয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক নাহিদ হোসেন রবিবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদককে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আটকের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
প্রসঙ্গত, জমির সীমানা নিয়ে শ্রীউলা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মালেক মল্লিকের সাথে অনিমেষ সরকারের বিরোধকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতের কোন এক সময়ে লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের সাইকেল মিস্ত্রী অনিমেষ সরকারকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ একই গ্রামের আনছার মোল্লার নিমগাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে আত্মহত্যার প্রচার দেওয়া হয়। এ ঘটনায় শনিবার নিহতের মা শেফালী রানী সরকার বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।