বেতন ভাতা ফেরতের নির্দেশ বহাল থাকা শিক্ষক সুরাইয়া হলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ!
স্টাফ রিপোর্টার: জালিয়াতির মাধ্যমে এমপিও ভুক্ত হওয়ায় বেতন ভাতা ফেরতের নির্দেশ বহাল থাকা শিক্ষক সুরাইয়া সুলতানা হয়েছে সাতক্ষীরার এড. আব্দুর রহমান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় চাকুরি না থাকা সুরাইয়া সুলতানা কিভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হলেন সেটি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী জানান, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদকে সরিয়ে জ্যোষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ২০ তম প্রভাষক সুরাইয়া সুলতানাকে গত ২৬ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসিয়েছেন অবৈধ কমিটির আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে সুরাইয়া সুলতানার চাকুরিই থাকে না। তার উত্তোলনের বেতন ভাতা ফেরত দেওয়ার জন্য বিগত ২০১৭ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নিরাবতায় আজও বহাল তবিয়্যতে আছেন তিনি।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে সুরাইয়া সুলতানা ডিগ্রির ৩য় শিক্ষক হিসাবে ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ইতিহাস বিভাগের যোগদান করলেও শিক্ষাদস্যু নামে পরিচিত তৎকালিন অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামানের সহযোগিতায় জালজালিয়াতির মাধ্যমে গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে এমপিও করান। অথচ ২০০৭ সালের নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তিনি ২০০২ সালের ২৫ জুলাই ইতিহাস বিভাগে নিয়োগ পান। কিন্তু জালিয়াতি করে ২০০৬ সালে গার্হ্যস্থ অর্থনীতিতে এমপিও করান প্রাপ্যতা বিহীনভাবে। যা ফৌজদারী অপরাধের শামিল। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সুরাইয়া সুলতানা প্যাটার্ন বর্হিভূত শিক্ষক হওয়ায় প্রাপ্যতাবিহীনভাবে সরকারি কোষাগার হতে ০১/০২/২০০৭ তারিখের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে বরাদ্দকৃত ও উত্তোলিত ৭৭.৯৪০/- টাকা এবং এর পরবর্তী সময়ে অর্থ্যাৎ ১৫/১০/২০২৪ তারিখ পর্যন্ত উত্তোলিত সমুদয় অর্থ সরকারী কোষাগারে ফেরৎযোগ্য। এমপিও ভুক্তিকালে প্রভাষক ইতিহাস পদে আবুল কালাম আজাদ নামে একজন শিক্ষক এমপিওভুক্ত ছিলেন এবং বর্তমানেও আছেন। সুতরাং এটি একটি ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও প্রপ্যাতাবিহীন এমপিওভুক্ত একজন তার চাকুরীকালে গৃহীত সমুদয় অর্থ সরকারী কোষাগারে ফেরৎ যোগ্য। সাথে সাথে সুরাইয়া সুলতানার বিরুদ্ধে পিডিআর এ্যাক্ট ১৯১৩ এ মামলা দায়ের করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গত ০২/০৭/২০১৭ ইং তারিখে ৩৭.০০.০০০০.০৭৪.০০৩২০১৪.৩৩৮ নং স্মারকপত্র অনুযায়ী ফৌজদারী মামলা দায়ের করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য মো: হুমায়ূন কবির প্রভাষক, ইসলামের ইতিহাস। শাহাজান কবির প্রভাষক ভূগোল তাদের এমপিও যথাক্রমে পরিসংখ্যানও অর্থনীতিও বাণিজ্যিক ভূগোল যা প্রাপ্যতাবিহীন পদে এমপিওভুক্ত হয়েছেন মর্মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ০২/০৭/২০১৭ ইং তারিখে এক চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন। এজন্য একই সাথে সুরাইয়া সুলতানাসহ সকলের বিরুদ্ধে উত্তোলিত সমুদয় অর্থ ফেরৎযোগ্য এবং পিডিআর এ্যাক্ট ১৯১৩-এ মামলা দায়ের করার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত সুরাইয়া সুলতানার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এখন একটা মিটিংয়ে আছি এসব বিষয় নিয়ে পরে কথা বলা যাবে।