কালিগঞ্জের স্কুলে ৮১০ দিন অনুপস্থিত থাকা শিক্ষিকা মনিরা’র বরখাস্তের দাবি এলাকাবাসীর
তাপস কুমার ঘোষ, কালিগঞ্জ: ৮১০ দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত শিক্ষিকা মনিরা জাহানের বরখাস্তের দাবিতে অভিভাবকসহ এলাকাবাসী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ।
গত রবিবার( ১ ডিসেম্বর )সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের ৭০ নং শুইলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক, এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে এ অভিযোগ দায়ের করেছে ।
লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা যায় মাঘুরালি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলীর কন্যা মনিরা জাহান মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরী পেয়ে গত ১৮-১০-২০১৭ ইং তারিখে শুইলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন । যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির কারণে ঐ শিক্ষিকাকে লাগাতার বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির কারণে তাকে তদন্ত সাপেক্ষে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না পেয়ে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে ।
এদিকে ওই শিক্ষিকার সব বিষয়ে সত্যতা পেয়ে গত ২৫-৮- ২০২৪ ইং তারিখে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমী তাকে চাকরি হইতে বরখাস্ত করেন । কিন্তু প্রভাবশালী ওই শিক্ষিকা খুঁটির জোর খাটাতে মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে খুলনা বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিনের চাকুরির শেষ কর্ম দিবসে রহস্যজনকভাবে গত ২৪-১০-২০২৪ ইং তারিখে বরখাস্ত কৃত শিক্ষিকা মনিরা জাহানের বরখাস্তের আদেশ বাতিল করে চাকরিতে পূর্ণবহাল করেন । কিন্তু তিনি কবে, কত তারিখে কর্মস্থলে যোগদান করবেন সে বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করেননি বরং তাকে নাকি গুরুদন্ড থেকে কমিয়ে লঘুদণ্ডে বরখাস্তের আদেশ বাতিল করা হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী প্রতিবাদে ফুসে উঠে। এর প্রেক্ষিতে গত ১৭ নভেম্বর ওই বিদ্যালয়ের সম্মুখে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এলাকাবাসী, ঐ শিক্ষিকার বরখাস্ত ও অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে মন্ত্রী পরিষদ সচিব বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
লিখিত অভিযোগ আরো জানা যায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি বাগিয়ে নিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের প্রভাব খাটিয়ে স্বামীর ঢাকায় চাকরির স্থলে ৩ সন্তানকে ভালো স্কুলে পড়াশোনার জন্য সপরিবারে বসবাস করলেও আজও পর্যন্ত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। স্বামী সন্তানের আদর স্নেহ ভালোবাসায় আগলে রাখলেও বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী ।
তার স্বামী ঢাকায় অবস্থিত বেসরকারি আমারত বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির সুবাদে সেখানেই বহাল তবিয়তে নিজের ৩ সন্তানকে ভালো স্কুলে পড়াশোনা করানোর জন্য নিজের কর্মস্থলে কোনদিন আসতে দেখা যায়নি।
১ এখনো পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের পরিবর্তে ৪ জন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার দারুন ব্যাঘাত ঘটলেও আজ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে তার দ্বারস্থ হয়েছেন। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ফলাওভাবে প্রকাশ হওয়ায় টনক নড়ে ওই শিক্ষিকার।
অবশেষে ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্যালয়ে যোগদান করবেন এমন খবরে ফুঁসে উঠছে অভিভাবক সহ এলাকাবাসী।
অভিভাবকরা সাংবাদিকদের জানান ঐ শিক্ষিকা বিদ্যালয় আসলে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে। এ কারণে বিধি মোতাবেক ওই শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।