অনলাইনঅপরাধজীবনযাপনফিচারলিডশ্যামনগরসাতক্ষীরা জেলাস্বাস্থ্য

শ্যামনগরে ভাতার কার্ড দাবি করায় বাঘ বিধবা বৃদ্ধার সাথে ইউপি সদস্যা নিপা’র কান্ড!

মোঃ ইসমাইল হোসেন, শ্যামনগর: শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ জেলে পল্লীর বাঘ বিধবা আন্ধারী রানী (৬৫)। অভাব-অনাটনে নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে বেঁচে আছে জেলে পল্লীতে। বাঘ বিধবা পল্লীতে যে কেউ প্যান্ট শার্ট পরা ভদ্রলোক অথবা সংবাদকর্মী তাদের খোঁজ খবর নিতে চাইলে অভাব দুঃখ কষ্টের কথা বলতে চান বাঘ বিধবা সোনা মনি, দীপালি, আন্ধারি, বুলিদাসীসহ আরো অনেক।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপকূলের বাঘ বিধবাদের করুন কথা উঠে আসে গণমাধ্যম কর্মীদের লেখনীতে। উঠে আসে এলাকার জন প্রতিনিধিদের গাফিলতির চিত্র।

কিন্তু ক্ষত অন্য স্থানে। ক্ষতি জনপ্রতিনিধির! সময়ের প্রেক্ষাপটে তার সাংবাদিককে কাছে পেয়েই ক্ষোভ জানালেন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ১, ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য নিপা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে।

তিনি জানান, সম্প্রতি কোন একটি অনুষ্ঠানে অতিথির আসনে বসা ইউপি সদস্য নিপা চক্রবর্তীর পাশে গিয়ে বাঘ বিধবা আন্ধারী রানী ঠিক তাই তার কষ্টের কথা বলতে গিয়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা পাওয়ার জন্য ওই নারী ইউপি সদস্যের কাছে দাবি করেন। তার দাবির প্রেক্ষিতে বাঘ বিধবারা সবসময় ‘সাংবাদিকদের সাথে বলে’ বলে তাদের কথাগুলো সেই ক্ষোভে আন্ধারীকে সাংবাদিকদের পাশে যেতে বলেন। এভাবে বলায় ওই বাঘ বিধবা বুকে কষ্ট নিয়ে ওই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জনগণের সেবক হয়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, গর্ভবতী কার্ড থেকে শুরু করে সরকারি অর্থের অপচয়সহ আত্মসাৎ এর অভিযোগ রয়েছে এই নারীর সদস্যের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ষাটোর্ধ্ব বাঘ বিধবা আন্ধারী রানী জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার দুই যুগ পার হলেও একটা সরকারি ভাতার কার্ড জোটেনি তার কপালে। আর সেই ক্ষোভের কথাটা ইউপি সদস্য নিপা রানীর কাছে জানাতেই তার ওপরে ক্ষেপে ওঠেন ওই নারী ইউপি সদস্য।

এ ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে বাঘ বিধবা সোনামণি দাসি কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রতিবেদককে প্রশ্ন করে জানতে চান, সত্যি কি আমরা ওপয়া-অলক্ষী? আমরা কি এভাবেই মরে যাব? আমাদের স্বামীকে বাঘে খাওয়াই কি আমাদের অপরাধ? আমরা কি জনপ্রতিনিধিদের কাছে কোন কিছু চাইতে পারবো না? এমন সব প্রশ্ন করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুই দুইটি স্বামীকে বাঘে খাওয়া এই বৃদ্ধা।

এ ঘটনার বিষয় ওই নারী ইউপি সদস্য নিপা চক্রবর্তীর ব্যবহৃত ০১৭৬৪-১৮৫৬৬৯ নাম্বারে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই রং নাম্বার বলে ফোনটি কেটে দেন।

এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনী খাতুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টা আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম। বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু খারাপ আচরণ করেছে সে কেন করেছে এবং যাতে পরবর্তীতে এ ধরনের আচরণ না করে এ বিষয়ে তাকে আমি নির্দেশনা দেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *