পরকীয়ায় অন্তঃসত্ত্বা, আটকে রেখে হাতুড়িপেটা করে গর্ভপাতের চেষ্টা
ডেস্ক রিপোর্ট: মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে পরকীয়া প্রেমের জেরে শারীরিক সম্পর্কের পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন এক তরুণী (৩০)। পরে তাকে বসতঘরে আটকে রেখে জোরপূর্বক গর্ভপাত করার চেষ্টা ও মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় ঢাকা থেকে গর্ভপাত করতে আসা টিমের এক নারী সদস্যকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার পশ্চিম সিংপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আটক নারীর নাম আম্বিয়া (৪২)।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার পশ্চিম সিংপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রিপন শেখ ৪ দিন আগে ঢাকার মিরপুর থেকে এক তরুণীকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। ওই তরুণীকে রিপন নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। পরে জানা যায়, পরকীয়া প্রেমের সূত্র ধরে ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল রিপনের। পরে বিয়ের জন্য চাপাচাপি করার কারণেই ৪ দিন আগে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন রিপন। ওই তরুণী ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
এতে মঙ্গলবার দুপুরে ওই তরুণীর জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে ঢাকা থেকে একটি টিম নিয়ে আসেন রিপন। এ সময় ওই তরুণীকে হাতুড়িপেটা করে হাত-পা ভেঙে দিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। এতে তরুণীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এছাড়া ওই সময় গর্ভপাত ঘটানোর টিমের আম্বিয়া নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রিপন শেখ পালিয়ে যান।
রিপনের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার স্বামী রিপন ওই তরুণীকে ঘরে আটকে রেখে অজ্ঞাত ২ নারীর সহযোগিতায় জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে হাতুড়িপেটা করে।
স্থাণীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর বলেন, ওই তরুণীকে হাতুড়িপেটা করেছে। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. কাশফি জানান, নির্যাতনের কারণে ওই তরুণী স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারছে না। তার হাত ও পায়ের হাড় ভাঙা। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়াসিন মুন্সী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এক নারীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।