এইচএসসির ফল প্রকাশ: জিপিএ-৫ বাড়লেও কমেছে পাসের হার
ডেস্ক রিপোর্ট: ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘিরে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। সাতটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দফায় দফায় পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা আসে। সরকার পতনের পর পরীক্ষা বাতিলের দাবি করে পরীক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে তাদের দাবি মানতে বাধ্য হয় সরকার। বাতিল করা হয় স্থগিত হওয়া পরীক্ষা। এমন কি ব্যবহারিক পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি।
পরবর্তী সময়ে জানানো হয় অনুষ্ঠিত বিষয়ের পরীক্ষা ও বাতিল পরীক্ষাগুলোতে সবাইকে অটোপাস দিয়ে এসএসসির নম্বর এইচএসসিতে যুক্ত করে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। ফলে সবার প্রত্যাশা ছিল এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ এ বড় সাফল্য দেখা যাবে। কিন্তু ঘটেছে উল্টা চিত্র। এবার প্রকাশিত ফলে জিপিএ-৫ বাড়লেও কমেছে পাসের হার।
প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন শিক্ষার্থী। তবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৬৬ হাজার ১৩ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছেন ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৯ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৯৫ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৩১ হাজার ৭১৪ জন।
এবারের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ বাড়লেও কমেছে পাসের হার। ২০২৩ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড়ে পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। তার মধ্যে, ছাত্রের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ছাত্রীর পাসের হার ৮০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড়ে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশে। তার মধ্যে, ছাত্রের পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। ছাত্রীর পাসের হার ৭৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে এবার পাসের হার কমেছে শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ।
তবে পাসের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা। ২০২৩ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৯২ হাজার ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী। চলতি বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। যেখানে ছাত্র ৬৪ হাজার ৯৭৮ জন এবং ছাত্রী ৮০ হাজার ৯৩৩ জন। সে হিসেবে এবার জিপিএ-৫-এর সংখ্যা বেড়েছে ৫৩ হাজার ৫৪৬।
- পাসের হার কোন বোর্ডে কত
ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এবার চমক দেখিয়েছে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে এ বছর পাসের হার ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, যা সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ। পাসের হারে এবার সবার নিচে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। প্রায় একই রকম পাসের হার যশোর ও চট্টগ্রাম বোর্ডেও। এ তিনটি বোর্ডে পাসের হার তুলনামূলক অনেক কম, যার প্রভাব পড়েছে গড় পাসের হারেও।
মূলত ইংরেজি, আইসিটি, হিসাববিজ্ঞানে শিক্ষার্থীরা বেশি খারাপ করেছে। এ কারণে এসব বোর্ডে ফল তুলনামূলক খারাপ হয়েছে। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, এবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ৭৯.২১ শতাংশ, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ৭০.৩২ শতাংশ, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮১.৮৫ শতাংশ, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ৮১.২৪ শতাংশ, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ৭১.১৫ শতাংশ, যশোর শিক্ষা বোর্ডে ৬৪.২৯ শতাংশ, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ৮৫.৩৯ শতাংশ, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ৭৭.৫৬ শতাংশ, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে ৬৩.২২ শতাংশ এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় পাস করেছে ৯৩.৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী।
এবার সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডে ৬টি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেগুলো হলোÑ বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি, পদার্থবিজ্ঞান, যুক্তিবিদ্যা ও হিসাববিজ্ঞান। অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহ বোর্ডে শুধু ইংরেজিতে পাসের হার ৭৭ দশমিক ১১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ১০০ জনে প্রায় ২৩ জনই ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছে। এ ছাড়া আইসিটি বিষয়ে পাস করেছে ৭৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।
হিসাববিজ্ঞানেও পাসের হার ৭১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যশোর বোর্ডে শুধু ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্য ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ। ইংরেজি পরীক্ষায় প্রতি ১০০ জনে মাত্র ৬৮ জন পাস করতে পেরেছেন। তবে বাকি ৫টি বিষয়ে ভালো ফল করেছেন যশোর বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডেও ইংরেজিতে ফল বিপর্যয় হয়েছে। এ বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার মাত্র ৬৯ শতাংশ। প্রতি ১০০ জনে ইংরেজিতে অকৃতকার্য ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী। যার প্রভাব পড়েছে বোর্ডের গড় পাসের হারেও। এ বোর্ডে পাস করেছেন ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ শিক্ষার্থী। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডেও ইংরেজিতে বেশি অকৃতকার্য হয়েছে শিক্ষার্থীরা। বোর্ডটিতে ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছে ২০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। বাকি ৫ বিষয়ে তুলনামূলক ভালো ফল করলেও ইংরেজির কারণে গড় পাসের হারে পিছিয়ে গেছে কুমিল্লা।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, আমাদের পরীক্ষার্থীরা তিনটি বিষয়ে খারাপ করেছে বলে ফলে দেখতে পাচ্ছি। ইংরেজি, আইসিটি ও হিসাববিজ্ঞান। বিষয়গুলোতে খারাপ করার কারণ কী, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রশ্নপত্রে কোনো ঝামেলা ছিল কি না, বা অন্য কোনো কারণ আছে কি না, খতিয়ে দেখে সে অনুযায়ী আগামী বছর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের মোর্চা আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, কয়েকটি বোর্ডে ইংরেজি, আইসিটিতে খারাপ ফল করেছে। এটার একটা নেতিবাচক প্রভাব গড় পাসের হারে পড়েছে। ঢাকা বোর্ড তুলনামূলক স্বাভাবিক ফল করেছে। বিগত বছরের তুলনায় ফল স্থিতিশীল বলা যায়।
তলানিতে থাকা যশোর বোর্ডের এক ধাপ উন্নতি
এইচএসসি পরীক্ষার ফলে গত বছর তলানিতে নেমে যাওয়া যশোর বোর্ড এবার এক ধাপ ওপরে উঠেছে। তবে জিপিএ-৫ বাড়লেও কমেছে পাসের হার। এ বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থী।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার বলেন, এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণরা করোনা মহামারির সময় ২০২০ ও ২০২১ সালে নবম ও দশম শ্রেণিতে ছিল। তখন শ্রেণিকক্ষে তাদের পাঠদান সম্ভব না হওয়ায় তাদের ইংরেজিতে দুর্বলতা রয়ে গেছে, যা এখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। পরীক্ষার্থীদের ৩১ শতাংশ ইংরেজিতে অনুত্তীর্ণ হয়েছে। এই প্রভাব পড়েছে সার্বিক ফলাফলে।
কুমিল্লা ও রাজশাহীতে এগিয়ে মেয়েরা
কুমিল্লা ও রাজশাহী বোর্ডে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা। শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৩ জন। আর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২৪ হাজার ৯০২ ছাত্র-ছাত্রী। পরীক্ষায় উপস্থিত মোট ছাত্র ছিল ৭১ হাজার ৮১৭ জন। তাদের পাসের হার ৭৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০ হাজার ৩০৫ জন। এই পরীক্ষায় উপস্থিত মোট ছাত্রী ৬৫ হাজার ৩৬৭। তাদের পাসের হার ৮৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৯৭ জন।
অন্যদিকে কুমিল্লায় ১ লাখ ১২ হাজার ৩১২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। এদের মধ্যে ছাত্র ৭৯ হাজার ৯০৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। পাসের হার ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ। তাদের মধ্যে ৪৪ হাজার ৬৫ জন ছাত্র এবং ৬৪ হাজার ২৪৭ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছেন। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৭ হাজার ৯২২ শিক্ষার্থী। গত বছরের চেয়ে এবারের ফল কিছুটা খারাপ হয়েছে। গতবার পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পান ৫ হাজার ৬৫৫ জন। তবে এ বছর ফলে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে আছে মেয়েরা। মেয়েদের পাসের হার ৭৩ দশমিক ৭০ শতাংশ আর ছেলেদের পাসের হার ৬৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
অটোপাসে চমক সিলেটের
বন্যার কারণে সিলেট বোর্ডে পরীক্ষা শুরু হয় দেরিতে। বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরে পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় সিলেটের পরীক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে আর পরীক্ষা দিতে হয়নি। এসএসসিতে বাংলা ও ইংরেজিতে তারা যে নম্বর পেয়েছি, সেটাই এইচএসসিতে অটোমেটিক তাদের ফলাফলে যুক্ত হয়েছে। এ দুটি বিষয়ে সিলেটে পাসের হার শতভাগ। অনুষ্ঠিত বাকি ৪টি বিষয়ে তুলনামূলক ভালো ফল করায় বোর্ডটি এবার ফলে ‘চমক’ দেখিয়ে সবার শীর্ষে উঠে গেছে।
এ বিষয়ে সিলেট বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জাকির আহমদ বলেন, হ্যাঁ, ইংরেজিতে অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা খারাপ করে। সেদিক দিয়ে ওই পরীক্ষাটা না হওয়ায় পাসের হার হয়তো কিছুটা বেশি আমাদের। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেই বাকি চারটি বিষয়ের পরীক্ষা দিয়েছে সিলেটের পরীক্ষার্থীরা। সেগুলোতে তারা ভালো করেছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক।’
আলিমে বেড়েছে পাসের হার
এবার ৯টি সাধারণ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। তবে এবার মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার বেড়েছে। প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, এবার আলিমে পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। যেখানে গত বছর ছিল ৯০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ফলে এবার প্রায় তিন শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া এ বছর আলিমে মোট জিপিএ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬১৩ জন।
শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠান বেড়েছে, ৬৫ কলেজে পাস করেনি কেউ
চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় সারাদেশে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এ বছর পাসের হার কিছুটা কমলেও শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছেন। গত বছরের চেয়ে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ৯৫৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছিলেন।
সেই হিসেবে এবার শতভাগ পাস করা কলেজের সংখ্যা বেড়েছে ৪৩৫টি। তবে, শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠান বাড়লেও এবার ৬৫ কলেজে কেউ পাস করেনি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪২। অর্থাৎ এবার শূন্য পাস কলেজের সংখ্যা গতবারের চেয়ে ২৩টি বেড়েছে।
‘অস্থির’ সময়ে পরীক্ষা দেওয়ার প্রভাব ফলে
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয় গত ৩০ জুন। ওই সময় থেকে মূলত কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ইংরেজি প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র এবং আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অনেক এইচএসসি পরীক্ষার্থী ওই সময় কোটা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। যারা সরাসরি অংশ নেননি, তাদেরও দৃষ্টি ছিল এ আন্দোলনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। সময়টিকে ‘অস্থির’ উল্লেখ করে তার প্রভাব ফলাফলে পড়েছে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পাসের হার কিছুটা কমেছে। যদি স্বাভাবিকভাবে সব পরীক্ষা হতো, তাহলে এ ফলকে গড়পড়তা (অ্যাভারেজ) বলা যেত। কিন্তু অর্ধেকের বেশি বিষয়ের পরীক্ষা তো হয়নি। সেখানে কিছু শিক্ষার্থী তো ফেল করতই। অথচ সেগুলো সবাই পাস করেছে। ফল খারাপ হয়েছে কোথায়? ইংরেজিতে, আইসিটিতে বাংলায় তো আর খারাপ করেনি কোনো বোর্ড।
ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে তো তুমুল আন্দোলন হয়েছে। ১৩-১৪ তারিখের দিকে তো কলেজছাত্ররাও নেমেছে। সেখানে কি এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ছিল না? আমার জানামতে ছিল। অনেক ছাত্রীও ছিল। একটা পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে এমন ছাত্র আন্দোলন হলে, তাতে প্রভাব পড়বেই।
কেউ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে, কেউ আবার সারা দিন-রাত ফেসবুকে কাটিয়েছে; সেটার কারণে প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও খারাপ পরীক্ষা হতে পারে। এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল না হওয়ার পেছনে এটাই বড় কারণ বলে আমি মনে করি।