শিক্ষকের কোলে মাদ্রাসা শিক্ষিকার অনৈতিক কর্মকান্ড, যা দেখলো ছাত্র
ডেস্ক রিপোর্ট: মাদ্রাসা সুপারের কোলে বসে আছেন এক শিক্ষিকা। ঘটনাটি মধ্যরাতের। তিন শিক্ষার্থী মাদ্রাসার আবাসিক ভবনের ছাদে যান ঘুরতে। হঠাত পাশের ভবনে চোখ পড়তে দেখে ফেলেন এই লিলাখেলা।
তারপর শিক্ষক-শিক্ষিকার এমন অশ্লীল কর্মকান্ড দেখে ফেলায় এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে এই মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় বাঙ্গড্ডা এলাকায়। ঘটনাটি দারুল ফালাহ্ হামীদীয়া বালক-বালিকা দাখিল মাদ্রাসার।
অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তাঁর নাম মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন হামীদী। তিনি মাদ্রাসাটিতে সুপারের দায়িত্বে আছেন।
আর শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকান্ড দেখে ফেলায় যাকে বেধরক মারধর করা হয়েছে, তাঁর নাম ফয়সাল মাহমুদ। তিনি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
রাতে মাদ্রাসার আবাসিক ভবনের ছাদে যান ফয়সাল। সাথে ছিলেন আরও তিন শিক্ষার্থী। হঠাত ফয়সাল জানালা দিয়ে দেখতে পান পাশের ভবনে শিক্ষক নিজাম এক নারী শিক্ষিকার সঙ্গে অনৈতিক কাজ করছেন।
বিষয়টি মাদ্রাসায় জানাজানি হলে ফয়সালকে ঘটনাটি গোপন রাখতে হুমকি দেন নিজাম উদ্দিন। কিন্ত ফয়সাল বিষয়টি গোপন না রেখে সবাইকে জানিয়ে দেয়। এতে ফয়সালের প্রতি ক্ষিপ্ত হন নিজাম। জানান নির্যাতনের শিকার ফয়সাল
ফয়সাল জানান, এর পরের দিন ফয়সাল অসুস্থতার কারণে ক্লাস না করে শুয়ে থাকেন আবাসিক ভবনে। নিজাম আগের ঘটনার অজুহাতে ক্লাস না করায় ফয়সালকে বেধড়ক মারধর করেন।
খবর পেয়ে ফয়সালের মা তাকে মাদ্রাসা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন দেন। ৪ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পরেও ফয়সালের শরীরে মারধরের চিহ্ন স্পষ্ট।
এ বিষয়ে ফয়সালের মা হালিমা বেগম বলেন, ‘সুপার নিজামের অপকর্মের বিষয়টি আমার ছেলে আমাকে জানিয়েছে। আমি তাকে বলি যাতে বিষয়টি গোপন রাখে। কিন্তু সে তো বাচ্চা। বয়স কম হওয়ায় সে সবাইকে জানিয়ে দেয়। একারণে নিজাম হুজুর আমার সন্তানকে বেধড়ক মারধর করে আহত করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই’।
মাদ্রাসার শিক্ষিকা-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অপকর্ম করা নিজামের পেশায় পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নিজাম স্থানীয় হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। নিজামের লাগামহীন অনৈতিক কাজে দিশেহারা অভিভাবকরা।
তবে অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত নিজাম বলেন, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি ষড়যন্ত্র। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফয়সাল ছুটি না নিয়ে ক্লাসে অনুপস্থিত ছিল। তাকে ক্লাসে না আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেছি। সে উচ্চস্বরে কথা বলে বেয়াদবি করেছে। এসময় তাঁকে বেত্রাঘাত করেছি। বেত্রাঘাতে তার শরীরে আঘাত লাগে। এ ঘটনায় পরিবারের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন।