অনলাইনকলারোয়ালিডসাতক্ষীরা জেলা

পানির তোড়ে কলারোয়ায় ধ্বসে পড়েছে বেত্রাবতী নদীর উপরের ব্রেইল সেতু, জনদুর্ভোগ চরমে

স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বাজারের পার্শ্ববর্তী বেত্রাবতী নদীর উপর নির্মিত ব্রেইল সেতুটি ধ্বসে পড়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাম্প্রতিক অতি বৃষ্টির পানির তোড়ে ও কচুরিপানার চাপে এ সেতুটি ধ্বসে পড়ে। ফলে কলারোয়া পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ড ও উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

কলারোয়া বাজারের জুয়েলারী ব্যবসায়ি চিত্তরঞ্জন সেন জানান, কলারোয়া বাজারের পার্শ্ববর্তী বেত্রাবতী নদীর উপর সেতুটি পৌরসভার ৬,৭ ও ৮নং ওয়ার্ড এবং জালালপুর, জয়নগর, কয়লা. খোর্দ্দ, কুশোডাঙাসহ ছয়টি ইউনিয়নের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। বেত্রাবতী নদীর উপর নতুন সেতু নির্মাণের জন্য তিন বছর আগে টে-ার আহবান করা হয়। তিন মাস আগে মূল সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হলেও জনগনের চলাচলের সুবিধার্থে আট মাস আগে মূল সেতুর পাশেই একটি লোহার ব্রেইল সেতু নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া পৌরসভার পানির পাইপ নদীর উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে আনার জন্য একটি কাঠের সেতু কয়েক বছর আগেই তৈরি করা হয়।

চিত্তরঞ্জন সেন আরো জানান, বৃহষ্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে পৌরসভার পানির পাইপ লাইনের নীচে থাকা কাঠের সেতুটি কচুরিপানা ও পানির প্রবল ¯্রােতে ভেঙে যায়। দুপুর ১২টার দিকে একটি পণ্যভর্তি ট্রাক যাওয়ার পরপরই কচুরিপানা ও পানির প্রবল ¯্রােতে ব্রেইল সেতৃটির দুই পাশ ধ¦সে পড়ে। এরপরপরই সাধারণ মানুৃষ কোন প্রকারে পায়ে হেঁটে চলতে পারলেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দূরবর্তী মানুষকে মটর সাইকেল, ইজিবাইক ও ভারী যানবাহন নিয়ে চার থেকে পাঁচ কিলো মিটার ঘুরে মুরারীকাটি সেতু বা হেলাতলা সেতুৃ পার হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের মোশাররফ হোসেন জানান, তাকে পেশাগত কারণে প্রতিদিন বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার মটর সাইকেলে কলারোয়ায় যেতে হয়। সেক্ষেত্রে কলারোয়া বাজারের গরু হাটের পার্শ্ববর্তী ব্রেইল সেতুই একমাত্র ভরসা। বৃহষ্পতিবার দুপুরে ওই সেতু ধ্বসে যাওয়ার পর তাকে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে মুরারীকাটি সেতু পার হয়ে উপজেলা সদরে পৌঁছাতে হয়েছে। একইভাবে মালভর্তি ইঞ্জিনচালিত ভ্যান নিয়ে বেত্রাবতী নদীর সেতুর পাশে অবস্থানকারি জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের শেখ বাপ্পি হাসান বলেন, পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে মুরারীকাটি সেতু পার হয়ে কলারোয়া বাজারে যেতে গেলে তাকে আরো ৩০ মিনিট বেশি সময় লাগবে।
তবে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কুশোডাঙা গ্রামের আব্দুল মালেক জানান, বেত্রাবতী নদীর উপর ব্রেইল সেতু ভেঙে যাওয়ায় তাকে ছয় কিলোমিটার ঘুরে হেলাতলা সেতু পার হয়ে যেতে হবে। এটা অনেক কষ্টের। সে অবিলম্বে সেতু সংস্কারের দাবি জানায়।

কলারোয়ার গদখালি গ্রামের ব্যবসায়ি আরিফ হোসেন টুটুল ও সরসকাটি গ্রামের আরিফা খাতুন জানান, ব্রেইল সেতৃ নির্মাণের আগে এর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এরপরও থেমে নেই হেভি লোডের যানবাহন চলাচল। ফলে সেতুটি দুর্বল হয়ে উত্তর পাশে বালির বস্তা দেওয়া হয়। বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২টার পর ওই সেতুর উপর দিয়ে পণ্যভর্তি একটি বড় ট্রাক পাও হওয়ার পর কচুরিপানাসহ প্রবল পানির তোড়ে সেতুৃটি ধ্বসে পড়েছে।

কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, ব্রীজটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায়। এ ধরণের সেতু নির্মাণে বা সংস্কারে বিশেষজ্ঞ কয়েকজন মিস্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে সেতুটি মেরামতের জন্য কাজ শুরু করা হবে। আশা করি আগামি দুই/তিন দিনের মধ্যে কাজ শেষ হলে যাতায়াত স্বাভাবিক হবে। সেক্ষেত্রে ভারী যান বাহন চলাচলের উপর নজরদারি বাড়ানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *